আজ বৃহস্পতিবার, জুন ১৯, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এসএসএফ’র ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বুধবার (১৮ জুন) এ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষণে এই শুভেচ্ছাবার্তা দেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এসএসএফ অন্যান্য বাহিনীর তুলনায় একটি ক্ষুদ্র বাহিনী, তবে এর কাজের গুরুত্ব এবং সংবেদনশীলতা অনেক বেশি। এই বাহিনী একটি প্রশিক্ষিত ও সুশৃঙ্খল বাহিনী যারা আমার ও রাষ্ট্রপতির সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন। বিগত ১০ মাসে বাহিনীটি দেশে-বিদেশে অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দক্ষতার সাথে পালন করেছে। এ সময় তিনি এসএসএফ’র সার্বিক পেশাদারিত্ব এবং আন্তরিকতা নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ এবং এর সকল সদস্যকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

সম্প্রতি বাহিনীটি কক্সবাজার ও রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন এবং চট্টগ্রাম বন্দর ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অন্যান্য বাহিনীর সাথে সমন্বয় করে সফলভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে উল্লেখ করে বলেন, শুধু দেশের অভ্যন্তরেই নয় দেশের বাহিরেও রাষ্ট্রীয় সফরগুলোতে এসএসএফ বিভিন্ন দূতাবাস এবং সংশ্লিষ্ট দেশের প্রটোকল ও নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে একযোগে কাজ করে সফরসমূহ সাফল্যমণ্ডিত করেছে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, বর্তমান বিশ্বে আধুনিক প্রযুক্তি ও তথ্য আদান প্রদান খুব সহজ হওয়ার কারণে, নিরাপত্তা হুমকির ধরন ও প্রকৃতি দ্রুত পরিবর্তনশীল। তাই শতভাগ নিরাপত্তা প্রদান করা খুবই চ্যালেঞ্জিং একটি বিষয়। বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও এসএসএফ সুষ্ঠুভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে। আমি আশা করি, এসএসএফ নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের নিরাপত্তা হুমকি পর্যালোচনা করবে এবং সেগুলো মোকাবেলা করার জন্য যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করবে। সম্প্রতি এসএসএফ যমুনার সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুসংহত করেছে। আমি আশা করি, বাহিনীটি একইভাবে এই কার্যালয়েরও সাইবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করবে। আমি আরো আশা করি, এসএসএফ একটি পেশাদার বাহিনী হিসেবে উন্নত প্রশিক্ষণ, উন্নত প্রযুক্তি এবং উন্নত মনোবলের সন্নিবেশে দিন দিন আরো উন্নতি সাধন করবে।

 

নিরাপত্তার খাতিরে এসএসএফকে বিভিন্ন ধরনের সীমাবদ্ধতা আরোপ করতে হয় যা অনেক সময় জনভোগান্তি সৃষ্টি করে থাকে উল্লেখ করে বলেন, এ ব্যাপারে আমি যতটুকু সম্ভব জনভোগান্তি পরিহার করার ব্যাপারে নির্দেশনা প্রদান করেছি। অতীতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভিআইপি ফ্লাইট এর জন্য প্রায় ১ ঘণ্টা সকল ফ্লাইট অপারেশন বন্ধ থাকত। এতে অনেক ধরনের জটিলতার সৃষ্টি হত। এই নিষেধাজ্ঞা তুলে দেয়া হয়েছে। এতে সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘব হবে বলে আশা করা যায়।

 

ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, আমি জেনে আশস্ত হলাম যে, এর প্রশিক্ষণ, অস্ত্র ও সরঞ্জামাদির আধুনিকায়ন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। বিশেষ করে, গত ৫ই আগস্ট ২০২৪ তারিখে এই বাহিনীর কিছু যানবাহন ও সরঞ্জামাদির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল, যা অল্প সময়ের মধ্যেই কার্যক্ষম করা হয়েছে। পাশাপাশি, বাহিনীর অভিযানিক কার্যক্রম আরো বেগবান ও কার্যকরী করার লক্ষ্যে অত্যাধুনিক অস্ত্র-সরঞ্জামাদির ব্যবহার এবং দেশে-বিদেশে উন্নত প্রশিক্ষণ গ্রহণের মাধ্যমে প্রতিটি সদস্যের সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে।

 

এ সময়, সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে সকল সহযোগী বাহিনী ও সংস্থার সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা এবং নিবিড় যোগাযোগ ও সমন্বয়ের মাধ্যমে তাদের দায়িত্ব পালন করার কথাও বলেন তিনি। সেইসাথে এসএসএফকে বিভিন্ন ধরনের প্রশিক্ষণ সহায়তা প্রদান করার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকেও ধন্যবাদ জানান তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, রাষ্ট্র ঘোষিত ভিআইপিদের নিরাপত্তা প্রদানে পেশাগত দক্ষতা অর্জনের পাশাপাশি চারিত্রিক দৃঢ়তা, উন্নত শৃঙ্খলা, সততা, দায়িত্বশীলতা এবং মানবিক গুনাবলীর বিষয়সমূহ গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে এবং সকল ধরনের রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে থেকে পেশাদারিত্বের সাথে কাজ করে যেতে হবে।

পরিশেষে, অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে ড. ইউনূস বলেন, আমি বিশ্বাস করি সুযোগ্য নেতৃত্ব, সঠিক দিকনির্দেশনা এবং এই বাহিনীর প্রত্যেক সদস্যের পেশাদারিত্ব ও আন্তরিকতার মাধ্যমে এসএসএফ’র উত্তরোত্তর উন্নতি অব্যাহত থাকবে।

Exit mobile version