আজ মঙ্গলবার, অক্টোবর ১৪, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শুক্রবার ছুটির দিনে রাজধানীর মাছের বাজারে উত্তাপ বরাবরই বাড়ে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। বৈরী আবহাওয়ার অজুহাতে বেড়েই চলছে বিভিন্ন প্রজাতির দাম। ভরা বাজারেও বলা হচ্ছে, এখনও যোগান সংকট কাটেনি। মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে রয়ে গেছে ইলিশ। মুরগি ও ডিমের বাজারেও অস্থিরতা চলছে। সবজি বাজারে যেন হঠাৎ আগুন লেগেছে, বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে প্রায় সব পণ্য। সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে আরও এক দফা দাম।

মাছের বাজারের অস্বস্তি কাটছে না। কখনো বৃষ্টি, কখনো বন্যা অথবা যেকোনো বৈরী আবহাওয়া—এমন নানা অজুহাতে দাম বৃদ্ধি করছেন বিক্রেতারা। যোগান স্বল্পতায় দাম বাড়ছে—এমন দাবি তাদের।

গত সপ্তাহের তুলনায় প্রায় সব ধরনের মাছের দাম কেজিতে ৫০ থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। গত সপ্তাহে ইলিশের দাম কিছুটা কমলেও, চলতি সপ্তাহে আবারও বেড়েছে। এক কেজি আকারের নদীর ইলিশের জন্য গুনতে হবে আড়াই হাজার টাকার বেশি। ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের স্বাদ নিতে চাইলে পকেট থেকে যাবে ১৮০০ টাকা।

একজন ক্রেতা বলেন, এখন বাজারে রুই মাছ ৫০০ টাকা কেজি ও তেলাপিয়া ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ আমাদের মতো মানুষের যে আয়, তাতে এমন দাম নাগালের বাইরে।

তবে বিক্রেতা বলছেন ভিন্ন কথা, বৃষ্টি-বন্যার কারণে আড়তে মাছের আমদানি কম। জেলেরা মাছ ধরতে যেতে পারছেন না। এজন্য কেজিতে ৬০ থেকে ৭০ টাকা দাম বেড়েছে।

এদিকে এক ইলিশ বিক্রেতা বলেন, এই সপ্তাহে নদীর মাছের দাম কেজিতে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেড়ে গেছে।

মাছের বাজারের পাশাপাশি পোল্ট্রি বাজারেও দামের আঁচ লেগেছে। ৩৪০ টাকা কেজিতে অপরিবর্তিত আছে সোনালি মুরগির দাম। কেজিতে ২০ টাকা বৃদ্ধি পেয়ে লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকায়। পোল্ট্রি মুরগির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় কেজি প্রতি ১৫ টাকা বেশি দাম চাইছেন বিক্রেতারা। এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকায়।

এক পোল্ট্রি বিক্রেতা বলেন, গত সপ্তাহে ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করেছি। এখন এই সপ্তাহে দাম বেড়েছে।

আরেকজন বলেন, অনেক ফার্ম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। মুরগির খাবার থেকে শুরু করে ভ্যাকসিন, ওষুধ ও খাদ্যের দাম বেড়েছে—এজন্য দেশি সোনালি জাতের মুরগির দাম বেশি।

এদিকে, সবজি বাজারে যেন হঠাৎ আগুন লেগেছে। বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে প্রায় সব পণ্য। রাজধানীতে দেড়শ টাকার বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে গোল বেগুন, কাঁচামরিচ ও টমেটো। ব্যবসায়ীদের যুক্তি, প্রাকৃতিক দুর্যোগে নিম্নাঞ্চলের সবজি নষ্ট হয়েছে। অন্য এলাকার যোগান দিয়ে পুরো দেশের চাহিদা মেটানো কঠিন। অন্যদিকে, পকেটের হিসাব মেলাতে ত্রাহি দশা ক্রেতাদের।

মাছ, মুরগির মতো সবজির বাজারেও আগুন লেগেছে। রাজধানীতে দেড়শ টাকার বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে গোল বেগুন, কাঁচামরিচ ও টমেটো। ব্যবসায়ীদের দাবি, প্রাকৃতিক দুর্যোগে নিম্নাঞ্চলের সবজি নষ্ট হওয়ায় যোগান সংকট তৈরি হয়েছে। অন্য এলাকার যোগান দিয়ে পুরো দেশের চাহিদা মেটানো কঠিন।

সবজির দাম যখন চড়া, তখন সীমিত আয়ের মানুষের খাদ্য তালিকায় ডিমের চাহিদা বাড়ে। কিন্তু সেখানেও দামের আঁচ লেগেছে। দুই সপ্তাহ আগে ১২০ টাকা ডজনের লাল ডিম আজকের বাজারে মিলছে ১৪০ থেকে ১৪৫ টাকায়। তবে, পাড়া-মহল্লার দোকানে আরও কিছুটা বেশি।

Exit mobile version