স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আমরা জাতি হিসেবে অসহিষ্ণু হয়ে গিয়েছি। আগে কোনও ঘটনা ঘটলে প্রতিরোধ করা হতো। আজকাল বিষয়টি কমে গেছে। কোনও ঘটনা ঘটলে মানুষ এখন ভিডিও করতে ব্যস্ত থাকে। অন্যায়ের ভিডিও না করে মোবাইল ছুঁড়ে মারলেও একটা প্রতিরোধ অন্তত হয়।
রোববার (১০ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে এমনটা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, গাজীপুরে যে ঘটনা ঘটেছে তা দুঃখজনক। আমাদের সমাজে এ ধরণের ঘটনা ঘটুক কেউ চিন্তাও করতে পারে না। তবে যে জীবন চলে গেছে তার তো কোনও ক্ষতিপূরণ দেয়া সম্ভব নয়। এ ঘটনায় জড়িত বেশিরভাগকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের শাস্তি নিশ্চিতে যেসব ব্যবস্থা নেয়া দরকার সব নেয়া হবে। পাবলিক চার্টার আইন আছে, সে অনুযায়ী জনগনকে সচেতন করতে হবে। যাতে এ ধরনের ঘটনায় প্রতিরোধ করা যায়। এ সময় এসব অন্যায়ের বিরুদ্ধে সবাইকে সচেতন করার আহ্বান জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
শেরপুরের স্ত্রীকে জীবন্ত কবর দেয়ার ভিডিও ভাইরালের বিষয়ে তিনি বলেন, এটা সাম্প্রতিক সময়ে ঘটেনি। কিন্তু অনেকে টাকা উপার্জনের জন্য সামাজিক মাধ্যমে ভিডিও পোস্ট করে থাকেন। আমাদের সামাজিক অবক্ষয় হচ্ছে। পরিস্থিতি এমন হয়েছে নানা নানীকে মেরে ফেলতে যাচ্ছে আর নাতি তার তাকে না বাঁচিয়ে ভিডিও করতে ব্যস্ত। জীবনের চেয়ে তার কাছে ভিডিও দিয়ে পয়সা উপার্জন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এসব বিষয়ের সমাধান সমাজবিজ্ঞানীরা ভালো দিতে পারবেন। এসবের জন্য ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা উচিত।
নিউমার্কেটে অস্ত্র উদ্ধার নিয়ে বলেন, সেখানে যেসব অস্ত্র পাওয়া গেছে তা দেশিয়। এজন্য যারা বিক্রি করে তাদের সতর্ক থাকতে হবে। আর লুট হওয়া অস্ত্র নিয়ে বলেন, প্রায় সাতশ অস্ত্র বেহাত হয়েছে। এসব উদ্ধারে পুরস্কার ঘোষণা করা হবে।
সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে প্রস্তুতি নিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনের ক্ষেত্রে ট্রেনিং শুরু হয়েছে। এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আনসার বাহিনী। এবারের নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসারের সাথে অস্ত্রসহ আনসার সদস্য দেয়া হবে। যাতে প্রিজাইডিং অফিসারের ওপর কোনও হামলা না হয়। আগে ২ জন থাকতো এবার ৩ জন থাকবে। আর যেসব বডি ক্যামেরা দেয়া হবে এসব পর্যবেক্ষণে থাকবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেয়ে যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে তাদের উপর নির্ভর করবে। এক্ষেত্রে জনগণও গুরূত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। নির্বাচনের সময় ইসির অধীনে থাকবে মন্ত্রণালয়। এ সময় সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতের আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।