সিলেটের জৈন্তাপুরে সরকারের বৈধ ইজারাকৃত বড়গাং নদী হতে বালু আহরণের সময় চাঁদাবাজির ঘটনা ঘটেছে। এতে বাধা দেওয়ায় মঙ্গলবার (১৭ জুন) চাঁদাবাজদের হামলায় একজন বারকী শ্রমিক (বালু উত্তোলনে নৌ শ্রমিক) গুরুতর আহত হয়েছেন।
এ দিয়ে দিনভর উত্তোজনা ছড়িয়ে পড়ে। অভিযুক্তদের একজন মজিদ মিয়া চাঁদা দাবি করে বলেন, আপনারা যার সঙ্গে বোঝার বোঝেন (ইউএনও, এসিল্যান্ড, পুলিশ ও সেনাবাহিনী), তবুও আমাদের টাকা দিতে হবে।
এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্ততি চলছে। অপরদিকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
জানা যায়, চলতি বছরের ১৪ এপ্রিল থেকে সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার বড়গাং নদীর ইজারা নেন সনি সোহা এন্টারপ্রাইজের প্রোপ্রাইটার চন্দন তালুকদার। সরকারের নীতিমালা মেনে তারা বারকী শ্রমিকদের মাধ্যমে বালু আহরণ করে আসছে। সম্প্রতি একটি চক্র ইজারাদারের বৈধভাবে বড়গাং নদী থেকে বালু আহরণের সময় চাঁদা দাবি করে।
আরও জানা যায়, রূপচেং মাঝের বিল এলাকার মৃত শমসুর উদ্দিনের ছেলে জাটকা জামাল (৩২), করিম আলীর ছেলে মজিদ (৫০), নিজপাট ইউপির সাবেক মেম্বার আ. নূর মেম্বার (৫০), মোজন আলীর ছেলে আলাই মিয়া (৪৫), মজর আলীর ছেলে জমির উদ্দিন ওরফে কলা জমির (৪৫), তসির আলীর ছেলে আবুল (৩৫), আম্বুলার ছেলে আব্দুল জলিল (৪২), বাবুল মিয়া (৪৫), ইসলাম মিয়ার (৩৮) নেতৃত্বে রূপচেং মাঝেল বিল এলাকায় বারকী শ্রমিকদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করে। তারা নৌকার গতিরোধ করে প্রতিটি থেকে ৩০০, ৫০০ এবং ৮০০ টাকা চায়।
এছাড়া কিছু শ্রমিকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে মজিদ মিয়া বলেন, ‘আপনারা যার সঙ্গে বোঝার বোঝেন (ইউএনও, এসিল্যান্ড, পুলিশ ও সেনাবাহিনী), তবুও আমাদের টাকা দিতে হবে। নয়তো ঝামেলায় পড়তে হবে।’
পরে শ্রমিকরা চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে মো. খোকন মিয়া বারকী শ্রমিকদের উপর দেশীয় অস্ত্র নিয়ে অর্তকিতভাবে হামলা চালায়। এতে উপজেলার গাতিগ্রামের বাবুল নাথের ছেলে সন্তোয় কুমার (৩৫) আহত হয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে জৈন্তাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেরণ করেন।
এ বিষয়ে ইজারাদারের পক্ষে আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, সরকারি নিয়মে আমরা বালু আহরণ করছি। গত কয়েক দিন ধরে একটি চক্রের সদস্যরা চাঁদা আদায়ের চেষ্টা করছে। এখন তারা সরাসরি ইউএনও, এসিল্যান্ড, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর নাম জড়িয়ে শ্রমিকদের হুমকি দিয়ে চাঁদা আদায় ও দাবি করেছে। আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
জৈন্তাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা আক্তার (লাবনী) বলেন, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে চাঁদাবাজ চক্রের সদস্যরা পালিয়ে যায়। আমি চলে আসার পরে শুনেছি পুনরায় শ্রমিকদের উপর হামলা করা হয়। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। নিদের্শনা অনুয়ায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
জৈন্তাপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাশার মোহাম্মদ বদিউজ্জামান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।