
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে নগর ভবনে আয়োজিত বাজেট অনুষ্ঠানে এ বাজেট ঘোষণা করেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক এ এইচ এম কামরুজ্জামান। একই সঙ্গে নগর উন্নয়নের স্বার্থে বকেয়া কর পরিশোধ করতে সব পর্যায়ের গ্রাহকদের প্রতি আহবানও জানান তিনি।
প্রশাসক কামরুজ্জামান জানান, গত ২০২৪-২৫ অর্থ বছরে সংশোধিত বাজেটের অর্থের পরিমাণ ছিল ৫৪৪ কোটি ২৯ লাখ ৩ হাজার ৭৯৬ টাকা। তবে আয়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এবারের বাজেটে ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৭৮ কোটি ৯৩ লাখ ৫৭ হাজার টাকা। বছর শেষে ৯৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা উদ্বৃত্ত থাকবে।
আরও পড়ুন: নারায়ণগঞ্জে শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে বাজেট অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নগর পরিকল্পনাবিদ মো. মইনুল ইসলামসহ জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, বিশিষ্ট নাগরিক, পেশাজীবী, সাংবাদিক ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
অনুষ্ঠানে জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের সাংবাদিক, রাজনীবিদ ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা নগরীর যানজট, জলাবদ্ধতা, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার দৌরাত্ম্য, হকারদের ফুটপাত দখল, অবৈধ যাবাহনের স্ট্যান্ড, হকার ও অটোরিকশা থেকে চাঁদাবাজি, ওয়াসার পানির অতিরিক্ত বিল আদায়সহ নানা সমস্যা তুলে ধরেন এবং নাগরিক সেবার মান নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
জবাবে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক কামরুজ্জামান বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জকে পরিকল্পিত, পরিচ্ছন্ন, সবুজ, পরিবেশবান্ধব, স্বাস্থ্যসম্মত ও দারিদ্র্যমুক্ত নগরী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে নতুন বাজেটে অন্তত বিশ বছর সময়সীমা বিবেচনা করে বিভিন্ন মেয়াদী উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে নগরীর যানজট ও জলাবদ্ধতার স্থায়ী নিরসন, বর্জ্য ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ, খাল খনন, গভীর নলকূপ স্থাপন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং ক্রীড়া খাতে উন্নয়নকে বিশেষ প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। এছাড়া সহজ, আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর কর এবং রাজস্ব ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ই-সফট ওয়্যারের মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ই ট্রেড লাইসেন্স, ই পানির বিল, ই সনদ সেবা চালু করা হবে।’
আরও পড়ুন: বাজেট ২০২৫-২৬ / শুল্ক ও কর কাঠামোতে আনা হয়েছে যেসব পরিবর্তন
যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকারের অর্থায়নে ৭৩৫ কোটি ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে শীতলক্ষ্যা নদীর উপর কদম রসুল সেতু নির্মান প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যে শুরুর কথা জানিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক বলেন, ‘সেতুটি বাস্তবায়ন হলে নদীর দুই পাড়ের মানুষের জনজীবনে স্বস্তি মিলবে। এছাড়া জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেন নির্মাণ, সুয়ারেজ লাইন নির্মাণ ও খাল খননসহ চলমান প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হলে নগরবাসী স্থায়ীভাবে সুফল ভোগ করবেন। এছাড়া গত বছরের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন এলাকায় শহীদদের আত্মত্যাগের স্থানগুলো স্মরণীয় করে রাখতে তাদের নামখচিত ৩৪টি স্ট্রিট মেমোরি স্ট্যান্ড নির্মাণ কাজ চলমান আছে। ইতিমধ্যে ১৫টির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন কবরস্থানে চারটি কবর সংরক্ষণ করা হবে এ বাজেটের আওতায়।’