
দেশে বার্ষিক চালের চাহিদা ৩ কোটি ৮০ থেকে ৩ কোটি ৯০ লাখ টন। মোট চাহিদার প্রায় ৬০ শতাংশই পূরণ হয় বোরো মৌসুমের আবাদে। বাকিটা আসে আমন আর আউশ থেকে। মাত্র দেড় মাস আগে বোরো ফলন তুলেছে কৃষক। স্বাভাবিকভাবেই প্রতিবছর মৌসুমের এই সময়টাতেই চালের দাম সহনীয় থাকে।
কিন্তু এ বছর বাজার চিত্র সম্পূর্ণ ভিন্ন। বাম্পার ফলনের পরও কোনো কারণ ছাড়াই দাম বাড়ছে। ঈদুল আজহার পর গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারে মিনিকেটসহ বিভিন্ন সরু, মাঝারি ও মোটা চালের দাম কেজি প্রতি ৬ থেকে ৮ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
রাজধানীর বাজারগুলোতে গত পনেরো দিনের ব্যবধানে প্রতিবস্তা মিনিকেটের জন্য ৪শ’ টাকা বাড়তি গুণতে হচ্ছে। বিআর ২৮ ও পাইজামের জন্যও প্রতিবস্তায় বাড়তি দিতে হচ্ছে ২শ’ টাকা পর্যন্ত।
মানভেদে এক কেজি মিনিকেটের জন্য দিতে হবে ৮০-৯০ টাকা। ৬০-৬৫ টাকা কেজির নিচে মিলছে না মাঝারি মানের চাল।
খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতাদের অভিযোগ, বেশুমার মুনাফা লুটছে মিল মালিক ও গুটিকয়েক করপোরেট প্রতিষ্ঠান।
চালের বাজার সহনীয় রাখার জন্য গত বৃহস্পতিবার অভিযানে নামে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর ও জেলা খাদ্য বিভাগ। তবে, এই অভিযানের কোন সুফল মেলেনি, এমন অভিযোগ করছেন রাজধানীর পাইকারি বিক্রেতারা। এর জন্য মিলগেট ও গুদাম পর্যায়ে তদারকির দুর্বলতাকে দায়ী করছেন তারা।
এদিকে, ঈদের টানা ছুটিতে ব্যহত হয়েছে উৎপাদন। আর বৃষ্টিপাতের জন্য মান নষ্ট হওয়ায় মনপ্রতি ধানের দাম বেড়েছে একশ থেকে দেড়শ টাকা। অন্যদিকে, বড় প্রতিষ্ঠানের কারসাজিতে বাজার আর অস্থির হয়েছে। দাম বৃদ্ধির জন্য এমন যুক্তি তুলে ধরছেন মিল মালিকরা।
নওগাঁ জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সভাপতি ফারুক হোসেন চকদার বলেছেন, পণ্য নষ্ট হওয়ার কারণে ধানের দাম মাসখানেকের ব্যবধানে প্রায় ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই দাম বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে চালের মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে ঈদের ছুটির কারণে আমাদের উৎপাদন কিছুটা বন্ধ ছিল। সে কারণে সাপ্লাই চেইনটা ব্যহত হচ্ছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে এটা স্বাভাবিক হবে বলে আমরা আশা করি।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য বলছে, বিভিন্ন ধরনের চিকন ও মাঝারি মানের চালের দাম গত এক বছরের ব্যবধানে ৭ থেকে ১০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে।