আজ
|| ১৫ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৩০শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ || ২২শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি
হত্যা মামলার আসামি মেঘনা পেট্রোলিয়ামের সহকারী ডিপো ম্যানেজার এহসানের খুঁটির জোর কোথায়
প্রকাশের তারিখঃ ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
কক্সবাজার প্রতিনিধি : কক্সবাজারের মহেশখালীর আলোচিত গৃহবধূ আফরোজা হত্যা মামলার অন্যতম আসামী মেঘনা পেট্রোলিয়াম গোদনাইল ডিপোর বিতর্কিত সহকারী ম্যানেজার মাসুদ হাসান এহসানের খুঁটির জোর কোথায়। আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি আশেক উল্লাহ রফিকের সহযোগী কালারমার ছড়া এলাকার ত্রাস আফরোজা হত্যা মামলার আসামি হাসান বশিরের পুত্র এহেসানের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন মিজানুর রহমান মিজান। হোয়ানক ইউনিয়নের পুঁইছড়া গ্রামের মোঃ ইসাকের ছেলে মিজানুর রহমান মিজান জানান, গত ২০২০ সালের ১২ অক্টোবর, আমার বোন আফরোজা নিখোঁজ হয়েছেন বলে আমাদের বাড়িতে খবর পাঠান, আমার বোনের শাশুড়ি এহেসানের মা রোকেয়া হাসান। আমরা নিখোঁজ আফরোজা যাকে খোঁজাখুঁজি করতে গেলে জানতে পারি আফরোজার স্বামী রাকিব হাসান বাপ্পি পলাতক রয়েছে। এতে আমাদের সন্দেহ হয়। আমরা পুলিশকে খবর দিলে মহেশখালী থানার একটি পুলিশ দল জানতে পারে প্রথম স্ত্রীর পাঁচ বছরের একটি কন্যা সন্তান বাপ্পীর সঙ্গে থাকে। সৎ মাকে হত্যা ও লাশ গুমের সব বিষয় সে দেখে ফেলে। তখন শিশুটিকে বাড়ি থেকে সরিয়ে ফেলা হয়। পরে পুলিশ কৌশলে শিশুটিকে উদ্ধার করে তার সৎ মায়ের কথা জানতে চায়। এসময় বাবা ও অন্যরা মিলে তার সৎ মাকে খুন করে লাশ গুম করার বিষয়টি পুলিশকে জানায় সে। সেই সূত্র ধরে পাঁচ দিন পর বাপ্পির বাড়ির আঙ্গিনায় পুঁতে রাখা অবস্থায় আফরোজার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। মহেশখালী থানার নিয়মিত হত্যা মামলার পাশাপাশি কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-২ আদালতে নিহত আফরোজার পিতা মোহাম্মদ ইসহাক বাদী হয়ে ৯ জনকে আসামি করে মামলা করলে বিচারক এজাহারটি হত্যা মামলা হিসাবে রুজু করতে মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জকে নির্দেশ দেন। যার মামলা নং-২১৯। একইসঙ্গে সিআইডি এএসপিকে মামলার তদন্ত করে চার্জশিট দেওয়ার আদেশ প্রদান করেন। এছাড়া মামলা নথিভুক্ত করে আদালতকে অবহিত করার আদেশ দেন মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জকে। মামলায় আসামিরা হলো- হাসান বশিরের পুত্র রাকিব হাসান বাপ্পি, তার দ্বিতীয় স্ত্রী রাজবাড়ী জেলার কামিনী আফরিন কংকা, হাসান বশিরের দ্বিতীয় স্ত্রী রোকেয়া হাসান, মৃত মু. হানিফের পুত্র হাসান বশির ও ছেলে হাসান আরিফ, হাসান রাসেল, মাসুদ হাসান এহসান, আসিফ হাসান ও মোহাম্মদ আক্তারের ছেলে মোহাম্মদ কাজল। নিহত আফরোজার ভাই মিজানুর রহমান আরো বলেন, আমার বোনের ঘাতক স্বামী রাকিব হাসান বাপ্পি পালিয়ে গেলেও তার ভাই আফরোজা হত্যার মাস্টার মাইন্ড এহসান জামিনে বেরিয়ে এসে আমাকেও মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে আমি আজ তার জন্য এলাকা ছাড়া কষ্টে সৃষ্টে দিনানিপাত করছি। তার অবৈধ অর্থের বিনিময়ে সাবেক অসাধু কর্মকর্তা এমডি টিপু সুলতানকে ম্যানেজ করে মেঘনা পেট্রোলিয়াম এ চাকরি করছেন। আমি আপনাদের মাধ্যমে জানতে চাই তার এত ক্ষমতার উৎস কোথায় তার এত টাকার উৎস কোথায় শুনেছি মেঘনা পেট্রোলিয়ামে দুর্নীতি করে অনেক টাকা কামিয়েছে। সে টাকায় আমাকে মেরে ফেলা হুমকি দেয়। আমার বাবা অসুস্থ হওয়ায় আমি মামলা পরিচালনা করছি বলে সে আমাকে মেরে ফেলার প্রকাশ্য হুমকি দিচ্ছেন।
আরো উল্লেখ্য যে, তেল ডিপোতে যারা সহকারী ম্যানেজার অপারেশন্স পদে দায়িত্ব পালন করে থাকেন তাঁদের যোগ্যতা ইলেকট্রিক, ইলেকট্রনিক্স ও ক্যামিকেল বিষয়ের ওপর ডিপ্লোমা বা বিএসসি থাকতে হবে। কিন্তু দৈনিক জনদর্পণের অনুসন্ধানে জানা যায়, মাসুদ হাসান এহসান আইসিটি বিষয়ের ওপর ডিপ্লোমা ও বিএসসি করেন। মেঘনা পেট্রোলিয়ামে এ পদে অসংখ্য যোগ্য প্রার্থী থাকলেও অনিয়মের মাধ্যমে দুর্নীতিবাজ সাবেক এমডি টিপু সুলতান মাসুদ হাসান কে ডিপোতে সহকারী ম্যানেজার হিসেবে পদায়ন করেছেন। এছাড়া অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ১৩ আগস্ট গোদনাইল মেঘনা ডিপোতে ৯ হাজার লিটার ডিজেল বাদশা টেক্সটাইলের নামে ইনভয়েস করে। ডিজেল ডেলিভারি নেওয়ার জন্য ডিজেল পয়েন্টে ঢাকা মেট্রো -ঢ-১১-০০১৯ নম্বরের ট্যাংকলরী লোড নেয়। এ সময় ৯ হাজার লিটার তেলের সাথে অতিরিক্ত ২ হাজার ২৫০ লিটার ডিজেলসহ মোট ১১ হাজার ২৫০ লিটার ডিজেল ওই ট্যাংকলরীতে লোড করা হয়।
জনদর্পণের অনুসন্ধানে জানা যায়, মেঘনা পেট্রোলিয়ামের গোদনাইল ডিপোতে কর্মরত অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার মোঃ মাসুদ হাসানের নির্দেশে মিটারম্যান সবুজ অবৈধভাবে ২ হাজার ২৫০ লিটার ডিজেল অতিরিক্ত ট্যাংকলরী ড্রাইভারের যোগসাজসে বিক্রি করে। গোদনাইল এসও রোডের স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ রনি ও তার সহযোগীরা খবর পেয়ে গাড়িটি আটক করে এবং ডিপোর ইনচার্জ মোঃ মাহবুবুর রহমানকে জানায়। এ নিয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা যাবৎ দেন-দরবার চলে।অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার মোঃ মাসুদ হাসান ডিপো ইনচার্জ ও রনির সহযোগীদের ম্যানেজ করে গাড়িটি ডিপো থেকে বের করে দেয়। ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য মিটারম্যান সবুজ ও আজিজকে মিটার থেকে অন্যত্র সরিয়ে দেয়। আজিজ এ ব্যাপারে কিছু না জানা সত্ত্বেও তাকে অন্যত্র সরানো হয়।এ ব্যাপারে মিটারম্যান সবুজের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি অতিরিক্ত ২ হাজার ২৫০ লিটার ডিজেল দেওয়ার কথা স্বীকার করলেও কার নামে ইনভয়েস হয়েছে তা তিনি বলেননি। জনদর্পণের প্রতিবেদক বারবার মাসুদ হাসান এহসানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টায় ব্যর্থ হন। মোবাইলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
সম্পাদক: মো: রবিউল হক। প্রকাশক: মো: আশ্রাফ উদ্দিন ।
প্রকাশক কর্তৃক বি এস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২, টয়েনবি সার্কুলার রোড (মামুন ম্যানশন, গ্রাউন্ড ফ্লোর), থানা-ওয়ারী, ঢাকা -১২০৩ থেকে মুদ্রিত
দেলোয়ার কমপ্লেক্স, ২৬ শহীদ নজরুল ইসলাম সড়ক (হাটখোলা), ওয়ারী, ঢাকা -১২০৩ থেকে প্রকাশিত ।
মোবাইল: ০১৭৯৮৬৫৫৫৫৫, ০১৭১২৪৬৮৬৫৪
ওয়েবসাইট : dailyjanadarpan.com , ই-পেপার : epaper.dailyjanadarpan.com
Copyright © 2025 Daily Janadarpan. All rights reserved.