আজ
|| ১৫ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ৩০শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ || ২২শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি
ডিসির নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কাদের ইন্ধনে দিব্বি শহরে ডুকছে অটো!
প্রকাশের তারিখঃ ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: একদিকে নারায়ণগঞ্জ জেলার মানবতার ফেরিওয়ালা নামে পরিচিত নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক শহরকে যানজট মুক্ত করতে একের পর এক পদক্ষেপ নিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে কোন একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের বিশেষ ব্যক্তিদের ইন্ধনে আইনের তোয়াক্কা না করেই নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দিব্বি শহরে ডুকছে অটো।
অটো শহরে প্রবেশের ফলে যতই শহরকে যানজটমুক্ত করতে মাইর খেয়েও স্বেচ্ছাসেবীরা নিরলস কাজ করে গেলেও শহরকে যানজটমুক্ত করা সম্ভব হয়ে উঠছে না। একদিকে নারায়ণগঞ্জ শহরে পর্যাপ্ত পরিমান ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় তাদের সহযোগিতায় স্বেচ্ছাসেবীরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে নিরলসভাবে কাজ করে গেলেও কিছু চাঁদাবাজ স্বার্থান্বেষী মহলের কারনে অনেকটা সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শিল্প নগরী নামে পরিচিত নারায়ণগঞ্জ শহর।এই শহরের অন্যতম প্রধান সমস্যা যানজট। নিত্যদিনের এই জনভোগান্তির অন্যতম প্রধান কারন হচ্ছে অটো এবং ব্যাটারিচালিত রিকশা। অলিগলি ছেড়ে এখন শহরের প্রধান সড়কগুলো দখল করে অবৈধ স্ট্যান্ড করে রমরমা অটো ব্যবসা চলছে এই শহরের সড়কগুলো।এতেই যানজটে নাস্তানাবুদ হয়ে চরম ভোগান্তিতে যখন নগরবাসী তখন নারায়ণগঞ্জের মানবতার ফেরিওয়ালা খ্যাত নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা জেলার ব্যবসায়ী সংগঠন বিকেএমইএ, চেম্বার অব কমার্স এবং নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সহযোগিতায় গ্রহন করেন অভাবনীয় এক সিদ্বান্ত। জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্রদের সহযোগিতায় ট্রাফিক মনিটরিং সেল গঠন করা হয়। যেখানে ছাত্ররা ভূমিকা পালন করবে স্বেচ্ছাসেবকের।
প্রথমার্ধ্বে ছাত্রদের স্বেচ্ছাসেবকের কাজে জেলা জুড়ে প্রশংসায় ভাসলেও দ্বিতীয়ার্ধে কাজ করতে গিয়ে বারবার বিপাকে পড়তে হচ্ছে। কখনো বা শুনতে হচ্ছে গালিগালাজ, কখনো বা শিকার হতে হচ্ছে হামলার আবার কখনো বা কোন বিশেষ রাজনৈতিক দলের নেতাদের কাছ থেকে শুনতে হচ্ছে প্রকাশ্যে খুনের হুমকির। আর আগষ্ট মাস থেকে দ্বিতীয়ার্ধে কাজ শুরুর পর থেকেই যেন কারো কারো মাথা ব্যথা হয়ে উঠছে এই স্বেচ্ছাসেবকরা।
চাঁদাবাজির এক অন্যতম বড় সেক্টর হিসেবে পরিচিত পরিবহণ সেক্টর। ফ্যাসিস আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে আরেক ফ্যাসিস দলের নেতাকর্মীরা নারায়ণগঞ্জ শহর ও তার আশেপাশে সড়কগুলোতে দিব্বি এই চাঁদা তুলে যাচ্ছে। আর দ্বিতীয়ার্ধে ট্রাফিকের কাজে এসে স্বেচ্ছাসেবকরা যেন এক বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে। যেখানে অবৈধ অটো স্ট্যান্ডগুলো থেকে প্রতিদিন কয়েক লাখ টাকা চাঁদা উঠছে সেখানে যানজট নিরসনে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবীদের কারনে চাঁদা তুলতে বাধা এবং শহরে অটো প্রবেশ করতে না পেরে চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় অনেকটা বিপাকে এই পরিবহণ সেন্ডিকেটের চাঁদাবাজরা। এদের রুখবে কে প্রশ্ন এখন জনমনে?
একের পর এক ডিসি অফিসের গোলটেবিলে বসে প্রশাসনিক, রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক নেতারা বসে সমাধানে আসলেও যেন তাদের সমাধান অথবা আইনের কোন তোয়াক্কা না করে অটোচালকরা দিব্বি শহরে প্রবেশ করছে। স্বেচ্ছাসেবকরা বাঁধা দিতে গিয়ে একের পর এক হামলার এবং হুমকির শিকার হচ্ছে। কাদের ইন্ধনে সহজেই শহরে কোন ভয় না করে ডুকছে এই অটোচালকরা তা তদন্ত বাদ দিয়ে কোথাও হচ্ছে ধরদেনার হিসেব আবার কোথাও হচ্ছে এক জাক এই তরুন ছাত্র স্বেচ্ছাসেবকদের মিটিং কিভাবে আরও একটু কাজ করকে শহরকে যানজটমুক্ত করা সম্ভব হয়।
সর্বশেষ গত ১৭ সেপ্টেম্বর অটো প্রবেশের শেষ সীমানা চানমারি পর্যন্ত থাকলেও অনেক অটো জোরপূর্বক আবার অনেক অটো উল্টো পথ দিয়ে চাষাড়া মোড়ে প্রবেশ মুখে প্রবেশ করে যানজটের সৃষ্টি করলে রুখতে স্বেচ্ছাসেবীরা গেলে অটোচালকের ছন্দবেশে থাকা কোন বিশেষ দলের লোকেদের হাতে হামলার শিকার হয় স্বেচ্ছাসেবীরা। উল্টো স্বেচ্ছাসেবীদের ঘাড়ে দোষ দিয়ে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংকরোড অবরোধ করে অটোচালকেরা। এনিয়ে দীর্ঘ ৪ ঘন্টার যানজটের সম্মুখীন হয় নারায়ণগঞ্জবাসী। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে জিম্মি করে রাখা হয় পুরো শহর সহ জেলা প্রশাসকের সিদ্বান্তকেও। ১৮ তারিখ থেকে কোন অটো চানমারির এবং মিশনপাড়ার পরে চাষাড়ায় প্রবেশ না করার নির্দেশ প্রদান করা হয়। কিন্তু সকাল থেকে অটো দিব্বি শহরে প্রবেশ করে। এতে স্বেচ্ছাসেবীরা বাঁধা দিতে গেলে গতকালের মত আবারো স্বেচ্ছাসেবীদের উপর হামলা চালানোর জন্য একজোট হতে থাকে অটোচালকরা। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে চানমারি থেকে সরে যায় স্বেচ্ছাসেবীরা। পরে পুলিশ কাজ করলেও পুলিশের বাধা না মেনেই শহরে প্রবেশ করছে অটো চালকরা।
একদিক দিয়ে শহরে অটো প্রবেশে আবারো যানজট বৃদ্ধি পাচ্ছে দেখে কিছু অটো আটকালেও পুলিশের রহস্যময় ব্যবহার এবং আশানুরূপ কোন সহযোগিতা না পেয়ে অটোচালকদের দিয়ে ১০/১৫ মিনিট ট্রাফিকের কাজ করে ছেড়ে দিচ্ছে। স্বেচ্ছাসেবকদের ভাষ্যমতে আমরা ট্রাফিকের কাজে কি কষ্ট করছি তা বুঝানোর জন্যই তাদের দিয়ে সাময়িক সময়ের জন্য কাজ করাচ্ছি।যাতে তারাও বুঝতে পারে আমাদের কষ্টটা। অন্যদিকে পুলিশের অভিযোগ পর্যাপ্ত পরিমান ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় সহযোগিতা করতে পারছে না তারা সম্পূর্ণরূপে। একদিকে চেম্বার অব কমার্স এবং বিকেএমইএ থেকে নিয়োজিত ২০ জন স্বেচ্ছাসেবক, সিটি কর্পোরেশন থেকে ৪৫ জন এবং কমিউনিটি পুলিশ থাকার পরও পুলিশ স্বল্পতার অজুহাতে ট্রাফিক পুলিশ। যার ফলে শহরকে যানজটমুক্ত করতে জেলা প্রশাসকের নির্দেশনাকে সহজেই বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে রাজনৈতিক দলের বিশেষ ব্যক্তিদের ছত্রছায়ায় থাকা অবৈধ স্ট্যান্ডের নেতারা এবং তাদের নির্দেশে অটোচালকরা।
সম্পাদক: মো: রবিউল হক। প্রকাশক: মো: আশ্রাফ উদ্দিন ।
প্রকাশক কর্তৃক বি এস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২, টয়েনবি সার্কুলার রোড (মামুন ম্যানশন, গ্রাউন্ড ফ্লোর), থানা-ওয়ারী, ঢাকা -১২০৩ থেকে মুদ্রিত
দেলোয়ার কমপ্লেক্স, ২৬ শহীদ নজরুল ইসলাম সড়ক (হাটখোলা), ওয়ারী, ঢাকা -১২০৩ থেকে প্রকাশিত ।
মোবাইল: ০১৭৯৮৬৫৫৫৫৫, ০১৭১২৪৬৮৬৫৪
ওয়েবসাইট : dailyjanadarpan.com , ই-পেপার : epaper.dailyjanadarpan.com
Copyright © 2025 Daily Janadarpan. All rights reserved.