সাতক্ষীরা জেলা প্রতিনিধি :
সাতক্ষীরায় আদালত প্রাঙ্গণে শিশু সন্তান আলিফ হাসান (৪) কোলে নিতে চাইলে শ্বশুর বাড়ির লোকজনের রোষানলে পড়ে অপদস্ত হয়েছে পিতা মো. মনিরুজ্জামান।
সোমবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে সাতক্ষীরা জজ কোর্ট প্রাঙ্গণে এই হৃদয়বিদারক ঘটনাটি ঘটেছে।
আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী পিতা ও পুত্র প্রতি মাসে একবার যোগাযোগ ও দেখা করতে পারবে এমন আদেশের ভিত্তিতে নিজ শিশু পুত্র আলিফ হাসানকে কোলে নিতে চাইলে শ্বশুর বাড়ির লোকজন জোরপূর্বক বেপরোয়াভাবে শিশু পুত্রকে ছিনিয়ে নেয় এবং ভুক্তভোগী পিতা মো.মনিরুজ্জামানকে শ্বশুর বাড়ির লোকজনের রোষানলে পড়ে অপমান অপদস্ত হতে হয়েছে। এ সময় আদালত প্রাঙ্গণে কান্নায় ভেঙে পড়েন শিশুহারা পিতা মনিরুজ্জামান। কান্নার শব্দে আদালত প্রাঙ্গনে মানুষের ভিড় জমে যায়। অবশেষে জনগণের চাপের মুখে পড়ে শিশু পুত্র আলিফ হাসানকে পিতার কোলে তুলে দিতে বাধ্য হয় শ্বশুর বাড়ির লোকজন।পরে শিশুটিকে নিয়ে চলে যায় শ্বশুর বাড়ির লোকজন।
বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশনা থাকলেও তার শ্বশুর ও তার লোকজন সেটি অমান্য করেছেন বলে ভুক্তভোগী দাবি করেন।
ঘটনার বিবরণে জানা যায় ভুক্তভোগী মো. মনিরুজ্জামান নিজ স্ত্রী মাদারীপুর জেলার সদর উপজেলার নয়াচর গ্রামের বাবুল ফরাজীর মেয়ে মেধা আক্তার সোনিয়া (২৩) এর সাথে ২০১৯ সালের ৯ জুলাই বিবাহ বন্ধে আবদ্ধ হয়। তাদের ঔরসে জন্ম হয় একটি পুত্রসন্তান। তারা শিশু পুত্রকে নিয়ে সংসার জীবন যাপন করে আসছিল। ভুক্তভোগী মো. মনিরুজ্জামান জানান, কি এক অজানা উদ্দেশ্য গত ১৩ জুন ২০২৫ বিকালে স্ত্রীর মা মাকসুদা বেগম নিজ বাড়িতে হাজির হয়ে তাদের বাড়িতে অনুষ্ঠান আছে বলে আমার স্ত্রী মেধা আক্তার সোনিয়াকে নিয়ে যায়। কিন্তু তারপর থেকে আমার স্ত্রীকে আর আমার বাড়িতে আসতে দেইনি। তার প্রতিকার চেয়ে বিজ্ঞ এক্সিকিউটিভ ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১০০ ধারার মামলা করি। এঘটনা মঙ্গলবার ধার্যের দিনে আদালত ভুক্তভোগীকে প্রতিমাসে তার শিশু সন্তান আলিফ হাসানকে দেখা করার সুযোগ ও তার ভরনপোষণের খরচ দেওয়ার নির্দেশ দেয়। সে লক্ষ্যে তার সন্তানকে মনিরুজ্জামান স্ত্রীর কাছ থেকে কোলে নিতে গেলে তার শ্বশুর বাবুল ফরাজী ও তার লোকজন জজ কোর্টের এপিপি এ্যাড.নজরুল ইসলামের নির্দেশে মারমুখি ভূমিকায় অবতীর্ণ হয় ও অকর্ত ভাষায় গালিগালাজ করে। তাদের অপ্রতিরোধ্য বাঁধার মুখেও সন্তানের কাছ থেকে পিতাকে দুরে রাখতে পারে নাই। সন্তানকে কোলে পেয়ে পিতা কান্নায় ভেঙে পড়ে। রক্তের বন্ধ না যায় ছেঁড়া, আদালত পাড়ায় একটি হৃদয় বিদারক দৃশ্যে পরিনত হয়। সবশেষে জয় হয়েছে মানবতার।