
গাজীপুরের শ্রীপুরে ১১ বছর বয়সী এক শিশুকন্যাকে আপন চাচাতো ভাই ও চাচাসহ ৪ জন মিলে একাধিকবার দলবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়েছে। প্রথমবার দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করার সময় ভিডিও ধারণ করে ৪ ধর্ষক। পরে সেই ভিডিওর ভয় দেখিয়ে কয়েকবার তাকে ধর্ষণ করে। তার পর ঘটনার ভিডিও ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপে ছড়িয়ে দেয়। এ ঘটনা ঘটেছে উপজেলার কাওরাইদ ইউনিয়নের কাওরাইদ মোড়ল পাড়া গ্রামে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিশুর পিতা শ্রীপুর থানায় চারজনের নাম উল্লেখ করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করার ২৪ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও কোনো আসামি গ্রেফতার হয়নি। তবে মামলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি আব্দুর বারিক।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, শিশুটি স্থানীয় একটি স্কুলে পড়াশোনা করে। গত ২০ দিন আগে স্কুল থেকে ফেরার পথে বৃষ্টির কারণে সে একটি দোকানে আশ্রয় নেয়। এ সময় ও-ই দোকানে থাকা, কাওরাইদ ইউনিয়নের মোড়ল পাড়া গ্রামের, শামসুল হুদার সন্তান, শফিকুল ইসলাম হায়দার(৪৫) , মৃত সামসুউদ্দিন মড়লের সন্তান, জসীম উদ্দীন(৩০), রুবেল মিয়ার সন্তান শিশুর আপন চাচাতো ভাই বাবলু মিয়া(২৫), ইসমাইল হোসেনের সন্তান, সাব্বির আহমেদ(২০)। শিশুটিকে কোল্ড ড্রিংকসের সঙ্গে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে পান করায়। পরে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে পাশের গজারি বনে নিয়ে গিয়ে তারা পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এ সময় তারা পুরো ঘটনার ভিডিও ধারণ করে এবং কারো কাছে বিষয়টি না বলার জন্য শিশুটিকে ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে হত্যার হুমকি দেয়। পরবর্তীতে এই ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে শিশুটিকে একাধিকবার গণধর্ষণ করে।
ভয়ে শিশুটি প্রথমে পরিবারের কাউকে কিছু জানায়নি। কিন্তু অভিযুক্তরা ভিডিওটি বিভিন্ন ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপে ছড়িয়ে দেয়। ভিডিওটি শিশুর ভাইয়ের নজরে আসার পর সে পুরো ঘটনা পরিবারকে খুলে বলে। পরে অভিযুক্তরা ভুক্তভোগী পরিবারকে নানাভাবে হুমকি-ধমকি দিতে থাকে। পরে গত শনিবার (৯ আগষ্ট) শিশুর পিতা শ্রীপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ভুক্তভোগীর ভাই বলেন, ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকে অভিযুক্তরা আমাদেরকে নানাভাবে হুমকি দিচ্ছে। আমি এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। অভিযুক্ত সফিকুলের পিতা শামসুল হুদা বলেন, অভিযোগের কথা আমি শুনেছি এখন আমার ছেলেকে আমি খুজতেছি পেলে একেবারে শেষ করে দিবে।আমার ছেলে সহ যারা এই অপরাধের সঙ্গে জড়িত আমি চাই তাদের শাস্তি হোক।
আরেক অভিযুক্ত বাবলুর মা রোকেয়া ছেলের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ঘটনার পর থেকে আমার ছেলে বাড়িতে নেই। আরও দুই অভিযুক্তের বাড়িতে গেলে তাদের কাউকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। স্থানীয় আলমগীর হোসেন মোড়ল বলেন, এরা সবাই মাদক সেবী, দিনের বেলায় এরা মাদক সেবন করে, রাতের বেলায় এরা চুরি করে। এরা মাদক সেবন করেই এই মেয়েটাকে সঙ্গবদ্ধ ধর্ষণ করেছে। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিওটি ছড়িয়ে দিয়েছে। এরা সবাই অপরাধী, এদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে আগামীতে আমার মা বোনও ঘর থেকে বের হতে পারবেনা। শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল বারিক জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর মামলা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।