
ফিলিস্তিনি পলিসি নেটওয়ার্ক আল-শাবাকারের সহ-নির্বাহী ফাতিহি নিমেরের অভিযোগ, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ আওদাহ হাথালিনের মরদেহ আটক রেখে তার পরিবার ও সম্প্রদায়ের মনোবল ভঙ্গ করার কৌশল অবলম্বন করছে।
নিমের বলেন, ‘এটি নিহতের পরিবারকে যেকোনো ধরনের শোক করা থেকে বঞ্চিত করার কৌশল। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা গোপন কবরস্থানে শতাধিক ফিলিস্তিনির দেহ রাখা হয়েছে। এটি গ্রামবাসীর মনোবল ভেঙে দেয়ার এবং আওদাহ যে প্রতিরোধের চেতনা জাগিয়েছিলেন তা স্তব্ধ করার কৌশলমাত্র।’
৩১ বছর বয়সী এই কর্মী মাসাফের ইয়াত্তা গ্রামবাসীদের বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদ বন্ধের আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন।
পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের দখলদারিত্বের নির্মমতা তুলে ধরা ‘নো আদার ল্যান্ড’ ডকুমেন্টারির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন ফিলিস্তিনি কর্মী আওদাহ হাথালিনকে। স্থানীয় সময় সোমবার (২৮ জুলাই) এক ইসরায়েলি সেটেলার গুলি করে হত্যা করেছে।
মাসাফার ইয়াত্তার উম্ম আল-খাইর গ্রাম (পশ্চিম তীরের দক্ষিণাঞ্চল)। গ্রামের কমিউনিটি সেন্টারের সামনে দাঁড়ানো অবস্থায় এক ইসরায়েলি সেটেলার হাথালিনের বুকে গুলি করে। ঘটনাস্থলেই মারা যান তিনি।
স্থানীয়রা চিহ্নিত করেছেন ইনোন লেভি নামের এক সেটেলারকে, যিনি অবৈধ ইসরায়েলি বসতিতে থাকেন। লেভি ২০২৪ সালের এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছিলেন।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ এখনও তার দেহ দাফনের জন্য পরিবারের কাছে হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তারা আওদাহ’র মরদেহ ফেরতের শর্ত হিসেবে শুধুমাত্র ১৫ জনের একটি সীমিত সংখ্যক মানুষকে শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে অংশ নেয়ার অনুমতি দেবে বলে উল্লেখ করেছে।
নিমের সতর্ক করে দিয়ে বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ইসরায়েলের ওপর আরও চাপ প্রয়োগ না করলে হাথালিনের হত্যাকাণ্ডে কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসবে না।
‘এই বসতকারীরা আকাশ থেকে পড়েনি। তাদের রাষ্ট্রীয় সমর্থন রয়েছে। সেনাবাহিনীর সমর্থন সবই তারা পায়। তাই ব্যক্তিগত পর্যায়ে নিষেধাজ্ঞা বা বিক্ষোভ সমাধান নয়,’ বলেন নিমের।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘এই ধরনের আচরণ বন্ধ করতে ইসরাইলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।’
গত মার্চে, ‘নো আদার ল্যান্ড’ অস্কার জয়ের কয়েক সপ্তাহ পর, আরেক নির্মাতা হামদান বালালকে তার গ্রামে সেটেলাররা মারধর করে। পরে তাকে ইসরায়েলি সেনারা গ্রেফতার করে।
অস্কার জয়ের পর থেকে মাসাফার ইয়াত্তায় সেনা ও সেটেলারদের হামলা বেড়েছে। বর্তমানে ইসরায়েল সেখানে ‘ফায়ার জোন’ ঘোষণা করে ১,২০০ ফিলিস্তিনিকে উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছে।