আজ
|| ১৪ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২৯শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ || ২১শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি
মেঘনা পেট্রোলিয়ামকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছেন টিপু সুলতান
প্রকাশের তারিখঃ ৯ জুলাই, ২০২৫
রাষ্ট্রায়ত্ত তেল বিপণন প্রতিষ্ঠান মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিপু সুলতান মেঘনা পেট্রোলিয়ামকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছেন। আওয়ামী লীগের ঘরের লোক হওয়ার সুবাধে বিপিসির জ্যেষ্ঠতার তালিকার ১০ জনকে ডিঙিয়ে ১১ নম্বরে থাকা এমপিএলের মহাব্যবস্থাপক (মানবসম্পদ) টিপু সুলতান ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে মেঘনা পেট্রোলিয়ামে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পান। একইভাবে জ্যেষ্ঠতার তালিকা লঙ্ঘন করে ডিজিএম (চলতি দায়িত্ব) মোঃ আবুল মেরাজকে ডিজিএম হিসেবে পদোন্নতি দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
দৈনিক জনদর্পণের অনুসন্ধানে জানা যায়, চলতি দায়িত্ব হিসেবে ৬ জনকে ডিজিএম করা হয়। তারা হলেন- শফিকুর রহমান তালুকদার, মজিবুর রহমান চৌধুরী, ওমর ফারুক মিয়াজী, মোঃ লুৎফর রহমান, আহসানুল আমিন ও মোঃ আবুল মেরাজ। ছয়জনের মধ্যে মোঃ আবুল মেরাজের তালিকা সর্বনিম্নে। তিনি বর্তমানে মেঘনা পেট্রোলিয়ামের গুপ্তখাল ডিপোতে আইএম হিসেবে কর্মরত আছেন। সমগ্র বাংলাদেশে মেঘনা পেট্রোলিয়ামের ২১টি জ্বালানী ডিপোতে গুপ্তখাল ডিপো থেকে তেল সরবরাহ করা হয়। সেখান থেকে সিস্টেম লসের তেল বিভিন্ন ডিপো ইনচার্জদের কাছে অবৈধভাবে বিক্রি করা হয়। বিশেষ করে গোদনাইল, ফতুল্লা, বাঘাবাড়ী, দৌলতপুর ডিপোতে দায়িত্বরত থাকা কর্মকর্তাদের কাছে বেশি পরিমাণে অবৈধভাবে তেল বিক্রি করা হয়। অবৈধভাবে বিক্রীত তেলের টাকা সব ডিপো থেকে সংগ্রহ করে এর সিংহ ভাগ মেঘনা পেট্রোলিয়ামের ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিপু সুলতানের কাছে হস্তান্তর করা হয়। টিপু সুলতান ২৭ জুলাই অবসর গ্রহণ করবেন। মোঃ আবুল মেরাজ টিপু সুলতানের নির্দেশে বিশ্বস্ততার সহিত অবৈধ কর্মকাণ্ড পরিচালনার উপহার হিসেবে ডিজিএম হিসেবে পদোন্নতি দিয়ে ২৭ জুলাই চাকরি থেকে অবসরে যাবেন। কারণ তিনি চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধি করার জন্য মেঘনা পেট্রোলিয়ামের বোর্ড চেয়ারম্যান ফারজানা মমতাজকে ম্যানেজ করার জন্য চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হন।
তিনি জিএম থাকাকালীন মেঘনা পেট্রোলিয়ামের দুটি মেগাপ্রকল্পের পিডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। প্রকল্প দুটি হলো- চট্টগ্রাম থেকে নারায়ণগঞ্জ, গোদনাইল ও ফতুল্লা ডিপো এবং ভারত থেকে পার্বতীপুর ডিপোতে পাইপলাইনে তেল সরবরাহ করা।
তার বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্য ও বদলি বাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে কেউ প্রতিবাদ করলে তাদের বিভিন্নভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়। তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতেও সাহস পায় না।
মেঘনা পেট্রোলিয়ামের সাধারণ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা জ¦ালানি মন্ত্রণালয় ও বিপিসিকে তার ব্যাপারে নজরদারির জন্য অনুরোধ জানান।
জানা যায়, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে মুখ্য সচিব ও জ¦ালানি সচিবকে ম্যানেজ করে বিপিসির তালিকায় ১১ নম্বরে থেকেও জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে ১০ জনকে ডিঙিয়ে তিনি ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব নেন। ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব নেওয়ার পরে তার সম্পদের পরিমাণ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায়। নামে-বেনামে তিনি বিভিন্ন জায়গায় অঢেল সম্পদ গড়ে তোলেন। তার গ্রামের বাড়ি রাজশাহীর সাগরপাড়ায় গড়েছেন ১০ তলা মার্কেট ও ফ্ল্যাট বাড়ি। কয়েক শত বিঘা জমিতে মাছের খামার ও কৃষি আবাদ করেন। এছাড়াও ধানমন্ডির ঝিগাতলায় রয়েছে আলিশান ফ্ল্যাট। টিপু সুলতানের দুর্নীতির ব্যাপারে দুর্নীত দমন কমিশনের উপ-পরিচালকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তার ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। আমরা তদন্তসাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এ ব্যাপারে মেঘনা পেট্রোলিয়ামের ব্যবস্থাপনা পরিচালন মোঃ টিপু সুলতানের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
সম্পাদক: মো: রবিউল হক। প্রকাশক: মো: আশ্রাফ উদ্দিন ।
প্রকাশক কর্তৃক বি এস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২, টয়েনবি সার্কুলার রোড (মামুন ম্যানশন, গ্রাউন্ড ফ্লোর), থানা-ওয়ারী, ঢাকা -১২০৩ থেকে মুদ্রিত
দেলোয়ার কমপ্লেক্স, ২৬ শহীদ নজরুল ইসলাম সড়ক (হাটখোলা), ওয়ারী, ঢাকা -১২০৩ থেকে প্রকাশিত ।
মোবাইল: ০১৭৯৮৬৫৫৫৫৫, ০১৭১২৪৬৮৬৫৪
ওয়েবসাইট : dailyjanadarpan.com , ই-পেপার : epaper.dailyjanadarpan.com
Copyright © 2025 Daily Janadarpan. All rights reserved.