
করফাঁকির কারণে সরকার বছরে রাজস্ব হারায় ২ লাখ কোটি টাকার বেশি। ২০২৩ সালের হিসাব পর্যালোচনা করে এমন তথ্য প্রকাশ করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
করফাঁকি, কর এড়িয়ে যাওয়া এবং করজালের বাইরে থাকার কারণে বড় হচ্ছে কালো টাকার অঙ্ক। এসব অর্থে অ্যাপার্টমেন্ট বা ফ্ল্যাট কিনে সাদা করার সুযোগ রেখেছে সরকার। প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারিভাবে নির্ধারিত এলাকাভেদে ফ্লাট বা ভবন কেনা এবং নির্মাণে কালো টাকা সাদা করতে হলে প্রতি বর্গফুটে নিদিষ্ট হারে কর দিতে হবে। সরকারের এমন সিদ্ধান্তে নানা মহলে হচ্ছে সমালোচনা। এমনকি সরকারের মধ্যেও এ ইস্যুতে তৈরি হয়েছে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব।
সমালোচনার মুখে এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের আভাস দিয়েছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। এছাড়া, আগেও দেয়া এই সুযোগ থেকে প্রাপ্তি পর্যালোচনা করছে অর্থবিভাগ। আর এটি ন্যায়বিচারের পরিপন্থী বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর বাজেট ম্যানেজমেন্টের পরিচালক ড. আবু ইউসুফ বলেন, যারা সৎ করদাতা আছে, তাদের প্রতি এটি ন্যায়বিচার হচ্ছে না। যারা একটু সীমিত আয়ের মানুষ বা যারা মধ্যবিত্ত তাদের এমনিতেই এই সমস্ত ফ্ল্যাট, প্লট কেনা হাতের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। এখন এ রকম একটা সুযোগ যদি দেয়া হয়, এটি নীতি-নৈতিকতার কথা যেটা আমরা বলছি, সেটার সাথে কিন্তু সাংর্ঘষিক।
বলা হচ্ছে, পরিবর্তিত এই সময়ে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া দুঃখজনক। এটি নৈতিকতার পরিপন্থী। সৎ করদাতারা নিরুৎসাহিত হবে।
সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, পরিবর্তিত এই সময়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া দুঃখজনক। এটি নৈতিকতার পরিপন্থী। সৎ করদাতারা নিরুৎসাহিত হবে। অপ্রদর্শিত বা এই কালো টাকা বৈধ করার উদ্যোগ থেকে সরকারের সরে আসা উচিত। কেননা এটিতে কোনও উপকার পাওয়া যায় না।
তিনি আরও বলেছেন, কেউ যদি কর ফাঁকি দেন সেটি ধরার জন্য সরকারের হাতে কোনও উপযুক্ত যন্ত্র নেই। এজন্য যারা কালো টাকা রাখেন তারাও আসলে টাকা সাদা করার জন্য কোনও উৎসাহিত বোধ করেন না।
স্বাধীনতার পর এ পর্যন্ত ২২বার কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেয় সরকার। সবচেয়ে বেশি টাকা সাদা করা হয় ২০২০-২০২১ অর্থবছরে, যা ২০ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা।