আজ
|| ৩রা মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ || ২০শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ || ৪ঠা জিলকদ, ১৪৪৬ হিজরি
গাজীপুরে জমি নিয়ে বিরোধ: আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে হামলা
প্রকাশের তারিখঃ ১৪ এপ্রিল, ২০২৫
গাজীপুর সদর উপজেলায় জমির দলিলে ভুল দাগ নম্বর উল্লেখ করার কারণে মালিকানা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে ভুক্তভোগী মনোয়ারা বেগম ও তার পরিবার আদালতের দ্বারস্থ হন। আদালত শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় আদালত জমিতে স্থিতাবস্থার (নিষেধাজ্ঞা) আদেশ দেন। তা অমান্য করে বিবাদীপক্ষ দলবল নিয়ে বাদীপক্ষের ওপর হামলা চালায়। এ ঘটনায় কয়েকজন আহত হয়েছেন।
শনিবার দুপুরে সদর উপজেলার পেপসি গেট এলাকায় এই হামলার ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী মনোয়ারা বেগম জানান, তার স্বামী মৃত আইনুদ্দিন ফকির আব্দুল করিমের কাছ থেকে জমি ক্রয় করেন। দলিল প্রস্তুতের সময় ভুলক্রমে প্রকৃত দাগ নম্বর ২৬৪৩-এর পরিবর্তে ২৬৪৪ উল্লেখ করা হয়। আব্দুল করিমের মারা যাওয়ার পর বিষয়টি বুঝতে পেরে আব্দুল করিমের দুই ছেলে ইব্রাহিম ও গোলাম রসুল সংশোধনী দলিল প্রদান করেন। তবে পরবর্তীতে আব্দুল করিমের বাকি একছেলে সন্তান চার মেয়ে সন্তান সেটি অস্বীকার করে বিরোধিতা শুরু করেন।
মনোয়ারা বেগম আরও জানান, ভুল সংশোধনের জন্য তারা আদালতে মামলা করেন। নিম্ন আদালতে মামলা খারিজ হলে উচ্চ আদালতে আপিল করেন,যা বর্তমানে বিচারাধীন। আদালত ওই জমিতে স্থিতাবস্থার (নিষেধাজ্ঞা) আদেশ দেন। কিন্তু বিবাদী কাশেম সহ তার বোনেরা তা উপেক্ষা করে সেখানে স্থাপনা নির্মাণের চেষ্টা করে এবং হামলা চালায়। তিনি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচার দাবি করেছেন।
মামলার নথি অনুসারে, জয়দেবপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের ৩৯৩১ নম্বর সাফ কবলা দলিল সংশোধনের দাবিতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, গাজীপুর জেলার বাড়ইপাড়া মৌজার সিএস খতিয়ান নং ২০৮, এসএ খতিয়ান নং ৩২৯ এবং আরএস খতিয়ান নং ৭৬৮ অনুযায়ী ২.২৯ একর জমির মধ্যে ৬১ শতাংশ জমি ১৯৭৬ সালের ১০ মে বিক্রি করা হয়। দলিল লেখার সময় ভুলক্রমে দাগ নম্বর ২৬৪৩-এর পরিবর্তে ২৬৪৪ লেখা হয়, যার ফলে মালিকানা ও উত্তরাধিকার নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়।
মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, ১৯৬৯ সালে আব্দুল করিম খরিদসূত্রে জমির মালিক হন। পরবর্তীতে তিনি আইনুদ্দিন ফকিরের কাছে ৬১ শতাংশ জমি বিক্রি করেন। দলিল লেখার সময় কাগজপত্র ঠিক থাকলেও লেখকের ভুলে দাগ নম্বর পরিবর্তন হয়ে যায়। তহশিলদার নামজারি ও খারিজের সময় এই ভুল শনাক্ত করেন।
আব্দুল করিমের মৃত্যুর পর তার দুই ছেলে ইব্রাহিম ও গোলাম রসুল ভুল সংশোধনে সম্মত হয়ে ১৯৮৮ সালের ২২ অক্টোবর সংশোধনী দলিল সম্পাদন করেন। মোহাম্মদ আইন উদ্দিন ফকির জমি নামজারি করে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখল করলেও, তার মৃত্যুর পর স্ত্রী, এক পুত্র ও চার কন্যার মধ্যে বিভ্রান্তি দেখা দেয়।
বাদীপক্ষের অভিযোগ, আবুল কাশেম, রাহেলা খাতুন, আব্দুল লতিফ, জয়নব বানু, ছালাউদ্দিন আহম্মদ, সিরাজ উদ্দিন, এসহাক মিয়া, রেজিয়া বেগম সহ তারা তাদের পূর্বপুরুষের বিক্রিত সম্পত্তি নিয়ে সংশোধনী দলিল অস্বীকার করেন এবং নিজেদের মালিক দাবি করে জমি বিক্রির চেষ্টা করছেন। অন্যদিকে বিবাদীপক্ষ দাবি করছেন, তারা পৈতৃক সূত্রে মালিক এবং সংশোধনী দলিল ভিত্তিহীন।
তিনি আরো বলেন, এরমধ্যে মৃত আব্দুল করিমে বাকি সন্তানদের কাছ থেকে জমির পাওয়ার নিয়ে নাজমুল নামের এক ব্যক্তি দলবল নিয়ে এসে জমি দখলের চেষ্টা করে এবং আমার পরিবারের উপর হামলা চালায়। এতে আমার পরিবারের কয়েকজন সদস্য আহত হয়।
এ বিষয়ে নাজমুল বলেন, আমরা পাঁচজন পাওয়ার মূলে কিনেছি তাই জমি দখল করতে গিয়েছে।
এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র বিরোধ তৈরি হয়েছে। বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন এবং সংশ্লিষ্টরা রায়ের অপেক্ষায় রয়েছেন।
এ বিষয়ে জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম জানান, আদালতের নিষেধাজ্ঞার পর ওই জমিতে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছে। কেউ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে স্থাপনা নির্মাণ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সম্পাদক: মো: রবিউল হক। প্রকাশক: মো: আশ্রাফ উদ্দিন ।
প্রকাশক কর্তৃক বি এস প্রিন্টিং প্রেস, ৫২/২, টয়েনবি সার্কুলার রোড (মামুন ম্যানশন, গ্রাউন্ড ফ্লোর), থানা-ওয়ারী, ঢাকা -১২০৩ থেকে মুদ্রিত
দেলোয়ার কমপ্লেক্স, ২৬ শহীদ নজরুল ইসলাম সড়ক (হাটখোলা), ওয়ারী, ঢাকা -১২০৩ থেকে প্রকাশিত ।
মোবাইল: ০১৭৯৮৬৫৫৫৫৫, ০১৭১২৪৬৮৬৫৪
ওয়েবসাইট : dailyjanadarpan.com , ই-পেপার : epaper.dailyjanadarpan.com
Copyright © 2025 Daily Janadarpan. All rights reserved.